ছয় ফুট ছয় ইঞ্চি উচ্চতা। শারীরিকভাবেও বেশ শক্তপোক্ত; কিন্তু মুখে লেগে থাকে হাসি। শাহিন শাহ আফ্রিদির বল অবশ্য কথা বলে ভিন্নভাবে। গতি, সুইংয়ে তার বাঁ-হাতি পেস খেলা মুশকিল যে কোনো ব্যাটারের জন্য। শাহিন শাহ আফ্রিদি ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন পাকিস্তানের পেস আক্রমণের সবচেয়ে নির্ভরকার প্রতীক। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের পেস বোলিং ইউনিটের নেতা তিনি।
যদিও বিশ্বকাপে আগে দীর্ঘ ঝড়ই পাড়ি দিতে হয়েছে শাহিনকে। নেতৃত্ব পেয়ে এক সিরিজ পরই সেটি হারিয়েছেন। ছয় মাসের মধ্যে বাবর আজমকে আবার অধিনায়কত্ব দেওয়ার ঘোষণায় বিবৃতি ছিল শাহিনের, পরে জানা গেছে সেটি নাকি তিনি দেনইনি। এ নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন শাহিন। পরে অবশ্য তার সঙ্গে বসে ওই ঝামেলা সমাধানের চেষ্টা করেছে পিসিবি। মাঠের ক্রিকেটে এবারের বিশ্বকাপেও অবধারিতভাবেই দলের সবচেয়ে বড় ভরসা থাকবে তার ওপর।
শাহিনের উত্থান তার ভাই রিয়াজ আফ্রিদির হাত ধরে। শাহিনের যখন চার বছর বয়স, তখন দেশের হয়ে একটি টেস্ট খেলেছিলেন তার বড় ভাই। পরে রিয়াজের অনুপ্রেরণাতেই টেপ টেনিস ক্রিকেট ছেড়ে শাহিন বেছে নেন সত্যিকারের ক্রিকেট বলের খেলা। ট্যালেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম হয়ে তিনি এরপর চলে আসেন পাকিস্তানের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের আঙিনায়।
শাহিন শাহ আফ্রিদি: টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার
ম্যাচ | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | সেরা | গড় | ইক. | ৪ | ৫ |
৬৫ | ২৩৬.৪ | ২ | ১৮৩৩ | ৯১ | ৪/২২ | ২০.১৪ | ৭.৭৪ | ২ | ০ |
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স
ম্যাচ | ওভার | মেডেন | রান | উইকেট | সেরা | গড় | ইক | ৪ | ৫ |
১৩ | ৪৯.১ | ১ | ৩২৪ | ১৮ | ৪/২২ | ১৮.০০ | ৬.৫৮ | ১ | ০ |
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শাহিনকে। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় পা রাখেন। এরপর ১৯ পেরোনোর আগেই তিন ফরম্যাটেই পাকিস্তানের ক্যাপ মাথায় তোলেন তিনি। এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে ২৯ টেস্ট, ৫৩ ওয়ানডে ও ৬৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
পাকিস্তানে বরবারই দেখা গেছে পেসারদের রাজত্ব। ওই মুকুটে এখন নতুন পালক শাহিন শাহ। যদিও বাঁ-হাতি পেসে স্বদেশি ওয়াসিম আকরাম বা মোহাম্মদ আমিরের চেয়েও শাহিনের বোলিং বেশি মেলে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের সঙ্গে। উচ্চতা, গতির সঙ্গে নিয়মিত গুড লেন্থে বল করে যেতে পারেন তিনি।
এবারের বিশ্বকাপেও পাকিস্তান পেস বোলারদের প্রাধান্য দেওয়া একটি স্কোয়াড। কয়েক বছর ধরে এই বিভাগই তাদের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা হয়ে গেছে। আফ্রিদির প্রথম স্পেলটাই ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের জন্য। যে কারণে অধিনায়ক বাবর আজমের সবচেয়ে বড় তুরুপের তাস হচ্ছেন তিনিই।
পাঁচ পেসারের স্কোয়াডে আফ্রিদিই থাকবেন নেতৃত্বে, তার নতুন বলে নিয়মিত উইকেট এনে দেওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকবে দলও। তাতেই হয়তো চূড়ান্ত সাফল্যটা ধরা দিতে পারে বাবর আজমদের হাতে।
আইএইচএস/
إرسال تعليق